পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে দুই থানা উদ্বোধন
পদ্মা সেতুর নিরাপত্তায় দুই পাড়ে চারতলা ভবনবিশিষ্ট দুটি নতুন থানার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (২১ জুন) বিকেলে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ থানা দুটির উদ্বোধন করেন তিনি।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষ্যে এরই মধ্যে সব কার্যক্রম শেষ করে থানা দুটিতে জনবলও পদায়ন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে সম্পূর্ণ বাংলাদেশের টাকায় পদ্মা সেতু তৈরি করেছি। এই পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষণ, যারা যাবে তাদের নিরাপত্তা বিধান এটাও আমাদের কর্তব্য। কাজেই পদ্মা সেতুকে সুরক্ষিত করা এবং যাত্রী সেবা দেয়া বা আশেপাশে যে জনগণ তাদেরও সেবা দেয়া আমাদের কর্তব্য। সে জন্য আমরা দুটি থানা; জাজিরায় পদ্মা সেতু দক্ষিণ আর মুন্সিগঞ্জের মাওয়ায় পদ্মা সেতু উত্তর—এই দুটি থানার আধুনিক ভবন সম্পন্ন করা হয়েছে।’
সেতুর দুই প্রান্তের প্রবেশমুখে গড়ে তোলা নান্দনিক চারতলা থানা ভবন শুধু যোগাযোগই নয়, সেতু ঘিরে বদলে যাওয়া এলাকার নিরাপত্তার জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। দুটি থানা মূলত সেতুর নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সাধারণ মানুষের আইনি সহায়তার জন্য কাজ করবে।
প্রতিটি থানায় একজন সহকারী পুলিশ সুপারসহ ৪০ জন করে পুলিশ সদস্য দায়িত্বে থাকবেন বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার আবদুল মোমেন।
ড. ইউনূস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের মর্যাদা ও সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু। আপনারা জানেন, আমাদের দেশের একজন বিশ্বখ্যাত মানুষ হলেও একটা ব্যাংকের এমডি পদ তার বয়সের কারণে ছেড়ে দিতে হচ্ছে সেটা তিনি মানতে পারেননি। একদিকে আমাদের সরকারের বিরুদ্ধে দুই-দুইটা মামলা করে হেরে গেছে, পরবর্তীতে ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের কাছে তদবির করে—যেভাবেই হোক আমাদের পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আমাদের ওপর নিয়ে আসে। যখন দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে না তখন বলে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র ছিল। এটাকে আমি চ্যালেঞ্জ দিয়েছিলাম এবং সেই থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা বাংলাদেশের মানুষ জাতির পিতার ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছি, কাজেই পদ্মা সেতু নিয়ে যখন মিথ্যা অপবাদ দেয়া হয় এবং একটি মামলাও করে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক কানাডার আদালতে, সেই আদালতের রায়ে স্পষ্টভাবে কোর্ট বলে দেয়—এখানো কোনো দুর্নীতি তো হয়নি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক যেসব অভিযোগ করেছে সেগুলো সব ভুয়া, বানোয়াট, মিথ্যা। এই কথার পরে তো আর কোনো কথা থাকে না, কিন্তু তারপরও যারা আমাদের বদনাম দিয়েছে তাদের টাকায় আমি পদ্মা সেতু করবো না এটাই আমার সিদ্ধান্ত ছিল।’
বঙ্গবন্ধুর গুচ্ছগ্রাম প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর এ দেশের দরিদ্র, শোষিত-বঞ্চিত মানুষ, গৃহহীন-ভূমিহীন মানুষের দিকে কেউ তাকানোর প্রয়োজনই মনে করেনি। অবশ্য মনে করবে কীভাবে! যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তারা ক্ষমতা নেয় ভোগের জন্য। ক্ষমতাটা তাদের ভাগ্য গড়ার জন্য। যেহেতু সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী তারা ব্যস্ত থাকবে কীভাবে ক্ষমতা টিকিয়ে রাখবে। একটার পর একটা ১৯-২০টার মতো ক্যু হয়। সারা রাত কারফিউ থাকে। বাংলাদেশের মানুষের কোনো অধিকারই ছিল না। না স্বাধীনভাবে চলার অধিকার-না বাঁচার অধিকার।’